বাংলাদেশ বিমান বাহিনী | |
---|---|
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রতীক | |
সক্রিয় | ১৯৭১ – বর্তমান |
দেশ | ![]() |
আনুগত্য | বাংলাদেশের সংবিধান |
ধরন | বিমান বাহিনী |
ভূমিকা | আকাশ যুদ্ধ |
আকার | ১৩,৬৯৪[১] |
অংশীদার | বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী |
বিমান সদর | কুর্মিটোলা, ঢাকা |
ডাকনাম | বিএএফ |
পৃষ্ঠপোষক | বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি |
নীতিবাক্য | বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত[২] |
রং | হালকা আকাশি, গাঢ় আকাশি |
মাস্কট | উড়ন্ত ঈগল |
বার্ষিকী | বিমান বাহিনী দিবস (২৮ সেপ্টেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস (২১ নভেম্বর) |
যুদ্ধসমূহ | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ উপসাগরীয় যুদ্ধ পার্বত্য চট্টগ্রাম সংঘাত |
ওয়েবসাইট | www.baf.mil.bd |
কমান্ডার | |
প্রধান সেনাপতি | রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
বিমান বাহিনী প্রধান | এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত |
প্রতীকসমূহ | |
বিমান বাহিনীর পতাকা | |
পরিচয়সূচক চক্র | |
Aircraft flown | |
আক্রমণ | ইয়াক-১৩০, এমআই-১৭১এসএইচ |
জঙ্গী বিমান | মিগ-২৯, এফ-৭, |
হেলিকপ্টার | বেল ২০৬, বেল-২১২, এমআই-১৭১, এমআই-১৭, এডব্লিউ-১৩৯, এডব্লিউ-১১৯ |
প্রশিক্ষণ বিমান | পিটি-৬, বেল ২০৬, এডব্লিউ-১১৯, এল-৩৯, কে-৮, ইয়াক-১৩০, এল-৪১০ |
পরিবহন বিমান | সি-১৩০বি, এএন-৩২, এল-৪১০, সি-১৩০জে |
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আকাশ যুদ্ধ শাখা। বিমান বাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশের আকাশ সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে বিমান সহায়তা প্রদান করাও বিমান বাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। এছাড়াও বিমান বাহিনী দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের সাথেও যুক্ত রয়েছে।
২০১৬ সালের বিজয় দিবসে উড্ডয়ন কৌশল প্রদর্শনরত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান
১৯৭১ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিমান বাহিনীৱ সৈনিকেৱা ওতপ্ৰতভাবে জৱিত ছিলেন এবং স্থল যুদ্ধে যুদ্ধ প্ৰস্তুতি, পৱিচালনা ও অংশগ্ৰহণ সৱাসৱি কৱেন। ১৯৭১ সালের সেক্টর অধিনায়কদেৱ সম্মেলনেৱ অনেক পৱে অৰ্থাৎ স্বাধীনতা যুদ্ধেৱ একেবাৱেই শেষাৰ্ধে থেকেই বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সংগঠিত কৱাৱ কিছু আলোচনা উঠে। সেই সময় এবং অবস্থাৱ প্ৰেক্ষীতে কোন ক্ৰমেই তা বাস্তৱায়নে সম্ভবপৱ এবং যুক্তি সংগত ছিলনা বলে কোন সিদ্ধান্তে পৌছায়নি প্ৰবাসী সৱকাৱ। কিন্ত যুদ্ধেৱ শুৱু থেকেই বেশ কিছু বিমান বাহিনীৱ কৰ্মকৰ্তা ও টেকনিকেল বৈমানিক সক্ৰীয় ভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধ ময়দানে সৱাসৱি সম্পৃক্ত ছিলেন। এদেৱ মাঝে মূলত স্কোয়াড্ৰন লীডাৱ এম হামিদুল্লাহ্ খান ও উইং কমান্ডাৱ খাদেমুল বাশাৱ ছিলেন ১১ এবং ৬ সেকুটৱেৱ অধিনায়ক পৰ্যায়। জেড ফোৰ্সে আশৱাফ, ৱৌফ, লিয়াকত প্ৰমুখও যুদ্ধ ময়দানে বিভিন্ন গুৰুত্বপূৰ্ণ পদে দায়িত্বৱত ছিলেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ৭ই এপ্ৰিল ১৯৭২ এ আনুষ্ঠানিক ঘষনা এবং যাত্ৰা শুৱু হয়।[৩] শুরুতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জনবল ছিল পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পক্ষত্যাগী বাঙালি কর্মকর্তা ও বিমানসেনা।[৩] ভাৱতে আশ্ৰয় নিয়ে যুদ্ধ সমাপ্ত পৰ্যন্ত থেকে যাওয়া বেশ কিছু বিমান কৰ্মকৰ্তা ছিলেন যেমন বদৱুল আলম, এ কে খন্দকাৱ, সুলতান মাহমুদ, বাকি সকল বেসামৱিক বিমান চালক সাবেক পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাবেক পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সাত্তার, সাবেক পিআইএ পাইলট ক্যাপ্টেন সরফুদ্দিন এবং সাবেক কৃষিবিভাগের পাইলট ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ। এদেৱ মধ্যে বিশেষ কৱে ২/৩ জন্য পাকিস্তান বিমান বাহিনীৱ কৰ্মকৰ্তাৱ দাবি অনুযায়ী ভারতে “বাংলাদেশ বিমান বাহিনীৱ” নাম কৱনটি ঘষোনা কৱা হয়। এবং এদেৱ যুদ্ধ বিমান চালাৱ প্ৰশীক্ষন দেয়া হয়। মূলত তাদেৱ দাবি অনুযায়ী ভাৱত থেকে তাৱাই বাংলাদেশে উৱে এসে বিল্ডিং বিধ্যস্ত অভিযান চালান। এই অপেৱেশন তাৱাই কিলো ফ্লাইট নাম দেন। ভারতের টোকেন উপহার হিসেবে কিলো ফ্লাইটেৱ সাফল্যৱ জন্য ছোট তিনটি পুৱাতন বিমানেৱ মধ্যে দেয়া একটি অকেজো ডাকোটা ডিসি-৩ পরিবহন বিমান, পৱিত্ত্যক্ত একটি প্রত্যন্ত ও অনুন্নত অঞ্চল পৰ্য্যবেক্ষণ বিমান ডি.এইচ.সি-৩ টুইন অটার ও একটি ঔষধ নিক্ষেপেৱ প্ৰয়োজন ব্যবহাৱিত অচল অ্যালুয়েট থ্রি হেলিকপ্টার বাংলাদেশে উৱিয়ে নিয়ে এসে বোমা বৰ্শন কৱেন। যাৱ বৰ্নণা ১৯৭২ এ জনাব বদৱুল আলমেৱ ইত্তেফাকে ছাপা একটি আৰ্টিকেলে প্ৰথম দেখা যায়। বস্তুতপক্ষে ১৬ই ডিসেম্বৱেৱ পৱে এই যাত্ৰাটি বাস্তৱায়ন হয়। যেই অপাৱেশন বিমান বাহিনীর শুৱু যাত্রা হিসেবে কিলো ফ্লাইট নাম কৱন হয়েছিল এবং জাহাজ তিনটি কোন প্ৰকাৱে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ৭ই এপ্ৰিল সৱকাৱি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী অনুষ্ঠানিক ৱাষ্ট্ৰীয় যাত্ৰা শুৱু কৱে।[৪] ভারতের আসামের ডিমাপুরের একটি পরিত্যাক্ত রানওয়েতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর টেকনিশিয়ানরা উপহার পাওয়া বিমানগুলো রূপান্তর ও আক্রমণ উপযোগী করে তোলার কাজ শুরু করে। ডাকোটা বিমানটিকে ৫০০ পাউন্ড বোমা বহনে উপযোগী করে তোলা হয়। টুইন অটারটির প্রতি পাখার নিচে ৭টি করে রকেট যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি এটি ১০টি ২৫ পাউন্ড ওজনের বোমাও বহন করতে পারত যা একটি দরজা দিয়ে হাত দিয়ে নিক্ষেপ করতে হত। আর অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারের সামনে একটি .৩০৩ ব্রাউনিং মেশিন গান এবং দুই পাইলন থেকে ১৪টি রকেট নিক্ষেপের ব্যবস্থা করা হয়। এই ছোট বাহিনীকে কিলো ফ্লাইট নামকরণ করা হয়। স্কোয়াড্রন লিডার সুলতান মাহমুদকে কিলো ফ্লাইটের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়।[৫][৬]
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমান বাহিনী অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করে।[৭] ওইদিন ক্যাপ্টেন আকরাম কর্তৃক পরিচালিত আক্রমণে চট্টগ্রামের তেল ডিপো ধ্বংস হয়ে যায়।[৮] ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিমান বাহিনী মৌলভীবাজারে অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনীর ব্যারাকে হামলা চালায়।[৮]
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাদুঘরে একটি এফ-৮৬ স্যাবর যুদ্ধবিমান
স্বাধীনতা যুদ্ধেৱ সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত অনেক বাংলাদেশী কর্মকর্তা ও বিমান সেনা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। যার ফলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সূচনালগ্নেই এক দল প্রশিক্ষিত জনবল পেয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৭৩~৭৪ সালে পাকিস্তান ফেরত জনবল বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়।[৩]
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণের ফলে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বহু বিমান মিয়ানমাৱ হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যায়। ভূমিতে আটকা পরা বিমান ভাৱত নিয়ে যায়। আত্মসমর্পণের পৱে পাকিস্তানি বাহিনীৱ এসব বিমানের বেশিরভাগই ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত বিমান রয়ে যায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রযুক্তিবিদরা কিছু বিমানকে মেরামত করে উড্ডয়ন সক্ষম করে তোলে। স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনী তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বড় ধরনের অনুদান পায় যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০টি মিগ-২১এমএফ এবং ২টি মিগ-২১ইউএম যুদ্ধ বিমান।[৪]
১৯৭৭ সালে জাপান এয়াৱলাইন্স ভাৱত থেকে ঢাকায় হাইজ্যাক হওয়াৱ ঘটনাৱ প্ৰেক্ষিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে বিদ্রোহ দেখা দেয়। যেটা দমনে অনেক কর্মকর্তা ও বিমানসেনা নিহত হয়। বিদ্রোহ পরবর্তী বিচারে আরও বহু সংখ্যক কর্মকর্তা ও বিমানসেনার মৃত্যুদণ্ড হয় যার ফলে বিমান বাহিনীর জনবল ভয়াবহ হ্রাস পায়।[৯] বিদ্রোহ পরবর্তী বিমান বাহিনীতে জনবল সংকটে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানো কঠিন হয়ে পরে যা একটি সদ্যসৃষ্ট বিমান বাহিনীর বিকাশে বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি করে।উড্ডয়নের পূর্ব মুহূর্তে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মিগ-২৯বি যুদ্ধ বিমান
জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর শাসনামলে পাকিস্তানের সাথে সামরিক সহযোগিতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। যার ফলস্বরূপ ১৯৮০ এর দশকের শেষ দিকে পাকিস্তান কয়েক স্কোয়াড্রন এফ-৬ যুদ্ধবিমান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে উপহার হিসেবে প্রদান করে।[৪] ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী রাশিয়া থেকে ৮টি চতুর্থ প্রজন্মের মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ক্রয় করে।[১০]
২০০৩ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমীকে জাতীয় পতাকা প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়।[১১]
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ইয়াক-১৩০ বিমান
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বর্তমানে ফোর্সেস গোল ২০৩০ নামক একটি উচ্চাভিলাষী আধুনিকায়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠছে। এই পরিকল্পনার অধীনে বিমান সক্ষমতা এবং ভূমি-ভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুইটিই শক্তিশালিতা করা হচ্ছে। ২০১১ সালে কক্সবাজারে নতুন বিমান ঘাটি স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় স্থাপিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিমানঘাটি। ঘাটি প্রতিরক্ষা ও পাইলট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠিত হয়েছে বিশেষায়িত ইউনিট স্কোয়াড্রন ৪১।
২০১০ সাল থেকে বিমান বাহিনীতে ১৬টি এফ-৭বিজিআই যুদ্ধ বিমান, ১৬ টি উচ্চতর জেট প্রশিক্ষণ বিমান, ৯টি কে-৮ প্রাথমিক জেট প্রশিক্ষণ বিমান, ৩টি এল-৪১০ পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমান[১২] এবং ২৩টি পিটি-৬ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান[১৩] যুক্ত হয়েছে। একই সময়ে আরও যুক্ত হয়েছে ১৬টি এমআই-১৭১এসএইচ যুদ্ধ হেলিকপ্টার,[১৪][১৫] ২টি এডব্লিউ-১৩৯ সামুদ্রিক উদ্ধার ও অনুসন্ধান হেলিকপ্টার[১৬] এবং ২টি এডব্লিউ-১১৯কেএক্স প্রশিক্ষণ হেলিকপ্টার।
২০১১ সালে এফএম-৯০ স্বল্প পাল্লার বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের মধ্য দিয়ে বিমান বাহিনী ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জন করে।[১৭] এখন পর্যন্ত বিমান বাহিনী দুই রেজিমেন্ট এই ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় করেছে। ইতোমধ্যে বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয়েছে জেওয়াই-১১বি, জেএইচ-১৬, ওয়াইএলসি-৬ এবং ওয়াইএলসি-২ রাডার ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অফিসার ও বিমানসেনা মিলিয়ে ৬০০ এর অধিক জনবল, ১২টি হেলিকপ্টার ও ১টি পরিবহন বিমান বর্তমানে জাতিসংঘ মিশনে মোতায়েন রয়েছে। এর মধ্যে হাইতিতে ৩টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার, মালিতে ৩টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার এবং কঙ্গোতে ৬টি এমআই-১৭১এসএইচ হেলিকপ্টার ও ১টি সি-১৩০বি পরিবহন বিমান মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া লাইবেরিয়া, আইভরি কোস্ট প্রভৃতি দেশেও বিমান বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট মোতায়েন রয়েছে।
মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান হচ্ছেন একজন চার তারকা এয়ার চিফ মার্শাল পদমর্যাদার কর্মকর্তা।[১৮] বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের চারটি শাখা রয়েছে: অপারেশন্স, প্লানস, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং মেইনটেনেন্স। প্রত্যেক শাখার প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান। প্রত্যেক সহকারি বিমান প্রধানের অধীনে রয়েছে একাধিক পরিদপ্তর যার পরিচালক হিসেবে থাকেন একজন এয়ার কমোডোর বা গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার কর্মকর্তা। প্রত্যেক পরিচালকের অধিনে থাকেন সহকারি পরিচালক এবং স্টাফ অফিসার পদের কর্মকর্তাগণ।
গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কর্মকর্তা:
দায়িত্ব | পদবি ও নাম |
---|---|
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটি খাদেমুল বাশার | এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গনি চৌধুরী, ওএসপি, জিইউপি, এনডিইউ, পিএসসি |
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটিবঙ্গবন্ধু | এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মাদ শফিকুল আলম, বিএসপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি |
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটি জহুরুল হক | এয়ার কমোডোর মুর্শেদ হাসান সিদ্দিকি, পিএসসি, জিডি(পি) |
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটি মতিউর রহমান | এয়ার ভাইস মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি, জিডি(পি) |
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটি পাহাড়কাঞ্চনপুর | এয়ার কমোডোর মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান, পিএসসি, জিডি(পি) |
এয়ার অফিসার কমান্ডিং বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাটি কক্সবাজার | এয়ার কমোডোর এম ইউসুফ আলি, জিইউপি, এনডিসি, পিএসসি, জিডি(পি) |
অফিসারসাধারণ দায়িত্ব (প্রশাসন)সাধারণ দায়িত্ব (পাইলট)সাধারণ দায়িত্ব (নেভিগেটর)আকাশ প্রতিরক্ষা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণবিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণআবহাওয়াপ্রকৌশলসরবরাহঅর্থ/হিসাবশিক্ষাআইনচিকিৎসা (সেনাবাহিনী থেকে অন্তর্ভুক্ত) | বিমানসেনানিরাপত্তাসংক্রান্তবিমান প্রকৌশলশিক্ষাগোয়েন্দাতড়িৎ এবং যন্ত্র প্রকৌশলসাধারণ প্রকৌশলযান্ত্রিক পরিবহন প্রকৌশলঅস্ত্র প্রকৌশলবেতার প্রকৌশলস্থল সংকেতরাডার পরিচালনাজীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামআলোকচিত্রবিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণআবহাওয়াসংক্রান্তচিকিৎসাসংক্রান্তসাচিবিকসরবরাহস্থল যুদ্ধযান্ত্রিক পরিবহন চালনাখাবারসরবরাহবাদকবিমানক্রু |
সমমানের ন্যাটো পদ | ওএফ ১০ | ওএফ ৯ | ওএফ ৮ | ওএফ ৭ | ওএফ ৬ | ওএফ ৫ | ওএফ ৪ | ওএফ ৩ | ওএফ ২ | ওএফ ১ | |
বাংলাদেশ | সমমানের পদ নেই | ||||||||||
এয়ার চিফ মার্শাল | এয়ার মার্শাল | এয়ার ভাইস মার্শাল | এয়ার কমোডোর | গ্রুপ ক্যাপ্টেন | উইং কমান্ডার | স্কোয়াড্রন লিডার | ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট | ফ্লাইং অফিসার |
সমমানের ন্যাটো পদ | ডব্লিউও-৩ | ডব্লিউও-২ | ডব্লিউও-১ |
বাংলাদেশ | |||
মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার | সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার | ওয়ারেন্ট অফিসার |
সমমানের ন্যাটো পদ | ওআর-৬ | ওআর-৪ | ওআর-৩ | ওআর-১ |
বাংলাদেশ | ||||
সার্জেন্ট | কর্পোরাল | লিডিং এয়ারক্রাফটমম্যান | এয়ারক্রাফটম্যান ১ |
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এমআই-১৭সি হেলিকপ্টারবাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭এমবি যুদ্ধবিমানের অবতরণ
মূল নিবন্ধ: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানের তালিকাআরও দেখুন: বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঐতিহাসিক বিমানসমূহের তালিকা
নাম | উৎস | ধরন | নিক্ষেপণ ব্যবস্থা | নিয়ন্ত্রণ | নোট |
---|---|---|---|---|---|
পিএল-৩ | চীন | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | এফ-৭ | ||
পিএল-৫ই | চীন | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | এফ-৭ | ||
পিএল-৭ | চীন | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | এফ-৭ | ||
পিএল-৯সি | চীন | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | এফ-৭ | ||
আর-২৭ | রাশিয়া | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | মিগ-২৯, ইয়াক-১৩০ | ||
আর-৭৩ | রাশিয়া | আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র | মিগ-২৯, ইয়াক-১৩০ | অবলোহিত রশ্মি নিয়ন্ত্রিত | |
এলএস পিজিবি | চীন | বোমা | এফ-৭ | কৃত্রিম উপগ্রহ নিয়ন্ত্রিত | |
এলটি পিজিবি | চীন | বোমা | এফ-৭ | লেজার নিয়ন্ত্রিত | |
ওএফএবি-১০০-১২০ | রাশিয়া | বোমা | মিগ-২৯, ইয়াক-১৩০ | ||
এফএম-৯০ | চীন | স্বল্প পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র | ভূমি ভিত্তিক |
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন করছে। ক্রমবর্ধমান দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালনের জন্য বিমান বাহিনীকে দক্ষিণ বিমান কমান্ড ও উত্তর বিমান কমান্ড নামক দুইটি কমান্ডে ভাগ করা হচ্ছে। দক্ষিণ বিমান কমান্ডের অধীনে একটি মেরটাইম এয়ার সাপোর্ট অপারেশন সেন্টার (এমএএসওসি) স্থাপন করা হবে। সমুদ্রসীমার নিরাপত্তার জন্য দক্ষিণ বিমান কমান্ডের অধীনে বরিশালে একটি বিমান ঘাটি স্থাপন করা হচ্ছে। একই সাথে কক্সবাজার বিমানঘাটির আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ চলছে।[১৩] সিলেটে আরেকটি বিমান ঘাটি স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।[২০] ঢাকার বাশার বিমান ঘাটি, চট্টগ্রামের জহুরুল হক বিমান ঘাটি, যশোরে মতিউর রহমান বিমান ঘাটি ও কক্সবাজার বিমান ঘাটিতে এয়ার ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স (এটিএস) রাডার স্থাপনের কাজ চলছে।[২১] বিমান বাহিনী ১০৫ অ্যাডভান্সড জেট ট্রেনিং ইউনিট নামক একটি উন্নত প্রশিক্ষণ ইউনিট স্থাপন করতে যাচ্ছে। এই ইউনিটটি যুদ্ধবিমানের পাইলট দের উন্নত প্রশিক্ষণের কাজ করবে। এই ইউনিটের অধীনে থাকবে তিনটি প্রশিক্ষণ স্কোয়াড্রন।[২২]
২০১৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যুক্তরাজ্য বিমান বাহিনীর ব্যবহৃত দুইটি সি-১৩০জে এমকে৫ পরিবহন বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর করে।[২৩] ২০১৯ সালের জুন মাসে এরকম আরও তিনটি বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[২৪] ২০২০ সালের মে অনুযায়ী, এর দুইটি বিমান বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে।[২৫]
২০১৮ সালের ২০ জুন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী চীনের চায়না ন্যাশনাল এ্যারো টেকনোলজি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন এর সাথে ৭টি কে-৮ জেট প্রশিক্ষণ বিমান ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর করে।[২৬]
২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর ইতালীয় কোম্পানি লিওনার্দো বাংলাদেশের কাছে অজানা সংখ্যক ক্রোনস ল্যান্ড রাডার বিক্রির চুক্তি করার ঘোষণা দেয়। সি-ব্যান্ডের এই ত্রিমাত্রিক রাডারের পাল্লা ২৫০ কিমি।[২৭]
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিমান বাহিনী একটি মনুষ্যবিহীন আকাশযান ব্যবস্থা ক্রয়ের দরপত্র আহ্বান করে। এই ব্যবস্থায় ৩/৪টি মনুষ্যবিহীন আকাশযান এবং ভূমি থেকে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।[২৮]
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সংসদে প্রতিরক্ষা কার্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক জানান বিমান বাহিনীর জন্য ১৬টি মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট (এমআরসিএ), ৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার, তিনটি ভিভিআইপি হেলিকপ্টার, দু’টি এয়ার ডিফেন্স রাডার ইউনিট, ২৪টি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান, দুইটি হালকা বিমান, একটি কে-৮ ডাব্লিউ সিমুলেটর, চারটি এমআরএপি যান, একটি এডব্লিউ-১১৯ সিমুলেটর, দু’টি কাউন্টার ড্রোন সার্ভেইল্যান্স রাডার সিস্টেম এবং একটি মোবাইল এটিসি টাওয়ার ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।[২৯]
![]() | উইকিমিডিয়া কমন্সে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
দেখানদেস![]() |
---|